২২ বছর পরে

একটি বিয়ে (আগষ্ট ২০১৯)

মুহম্মদ মাসুদ
  • ১২
  • ৪৮
আজ ১৪ এপ্রিল। এই দিনেই শুরু হয়েছিলো কিছু রাগ অনুরাগের রহস্য, মান অভিমানের পর্ব, চোখাচোখি চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকা দৃশ্য। পিছনে পিছনে হাঁটা আর চুলের খোঁপা থেকে পরে যাওয়া ফুলগুলো হাতের মুঠোয় তুলে রাখার দৃশ্যটা আজও ভাসে চোখের পর্দায়। সেদিন কৌতূহলী ভেবেছিলাম - ছেলেটি কেন ফুলগুলো কুড়াচ্ছে। কিন্তু আজ অন্য রকম একটি গল্পের সূচনা হচ্ছে।
নিজের বিয়ের আগের দিনের গল্প অনুভব করতেই চোখে কিঞ্চিৎ পরিমাণ অশ্রুর গড়াগড়ি হলেও তেমন উপলব্ধি হওয়ার মতো কিছু ছিলো না। শুধু বারবার বাবা-মা'র কথা মনে পড়েছিল।
১৩ তারিখ খুব ভোরে ফোন দিয়ে বললো শহরে যেতে। কিন্তু আমি বারবার তাকে না করছিলাম। ও শুধু বলছিলো বারবার অনুরোধ করেই যাচ্ছিলো। কি আর করা। অগত্যা যেতেই হলো। উদ্দেশ্য একটাই - হলুদ শাড়ি কিনে আনা, যেন সন্ধ্যায় আমি হলুদ শাড়ি পড়ে নিজের গায়ে একটু হলুদ মাখি। হলুদের গন্ধ মেখে ওর পাশাপাশি ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকি। কথাগুলো শুনে খুব ভালো লেগেছিল। সত্যি! ও আমাকে অনেক বেশি ভালোবাসে।
তোমার নিশ্চয়ই বিয়ে নিয়ে, গায়েহলুদ নিয়ে অনেক অনেক স্বপ্ন ছিল। যে স্বপ্নে তুমি রোজরোজ ডুবে ডুবে মুখ লুকিয়ে মুচকি হাসতে। কখনো কখনো হয়তো ডানাকাটা পরীর মতো আকাশে বাতাসে ঘুরে বেড়াতে। কিন্তু আমাকে, এই অস্বচ্ছল মানুষটাকে, এই নির্বুদ্ধিতার অন্ধকারে আচ্ছন্ন নিরুপায় মানুষটাকে বিয়ে করার কারণে কোনোটাই পূরণ হচ্ছে না। সত্যি, আমি খুবই লজ্জিত। কিন্তু এতোকিছুর পরেও আমি শত শতবার চাই আজ সন্ধ্যায় তুমি হলুদ শাড়ি পরে ফুল দিয়ে সাজবে, আয়নার সামনে বসে নিজেই নিজেকে দেখবে। আর এতো কিছুর আড়ালে একটু সময় পেলে ভাববে "আজ তোমাকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী লাগছে"। আর ঠোঁটে গাঢ় লাল লিপস্টিক, গালে হলুদ মেখে আমাকে ফোন দেবে। আমি তোমার শরীরে হলুদ মাখা অনুভব করবো। আর বারবার দিশেহারা হয়ে যাবো।
আমি একা একা শাড়ি কিনেছি। গাঁদা ফুলের মালা কিনেছি। কী মনে করে একটা লাল পাঞ্জাবিও কিনেছি। আর ওর পছন্দের পারফিউম। যে গন্ধে আমি নিজেও ডুবে ডুবে তলিয়ে গিয়েছি বারবার। আসলে ওর পছন্দ আছে বেশ। এজন্যই তো .....।
সন্ধ্যায় নিজে নিজে সেজেছি। বাথরুমের আয়নায় নিজেকে দেখে আমার চোখ ফেটে পানি চলে আসে। চোখ মুছে খোঁপায়-কানে গাঁদা ফুলের মালা গুঁজেছি।
হঠাৎ দরজায় কলিং বেলের শব্দ। দরজা খুলে বেরিয়েই দেখি একগুচ্ছ লাল গোলাপের তোড়া নিয়ে দারোয়ান দাঁড়িয়ে। কোনরকম হাতে দিয়েই বললো - আপা, ভাইয়া গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। ততক্ষণে মোবাইলে একটি মেসেজের শব্দ এসে কানে বাজলো। মোবাইল খুলতেই দেখি লেখা - জান, যেভাবে আছো সেভাবেই বেড়িয়ে আসো।
গেইট থেকে একটু দূরে ফুটপাতে বসে হাঁকিয়ে সিগারেট টানছে। আমি সামনে যেতেই সিগারেট ফেলে দেবে এমন সময় বলে উঠলাম - আজ সিগারেট ফেলবে না। এরপর থেকে তো তোমার সিগারেটের গন্ধ আর ধোঁয়ার সাথেই আমার রোজরোজ বাসর হবে। ও শুধু ঠোঁট টিপে হাসছে। বললো - রিক্সায় বসো। গায়ে হলুদ মাখাবো। আর সারারাত ফুটপাতের লাল নীল হলুদ আলোয় তোমাকে দেখবো।
চার-পাঁচটা প্রদীপ দিয়ে সাজানো ছোট্ট একটি রুম। অন্ধকারে সূর্যের আলো এসে বাসরের ফুলগুলোকে তখনও অবধি শুকিয়ে যাচ্ছে। সেখানে হলুদের কী স্নিগ্ধ ছিমছাম আয়োজন। সে কী খুনসুটি! সে কী আহ্লাদ! সে কি আনন্দ ক্ষন! সে এক অন্য রকম রকম বাসরঘর। হেমন্ত আর আমার দুই গালে কাঁচা হাসি।
হেমন্ত সেদিন রাতে ওর লেখা একটি কবিতাটি পড়ে শোনালো -
"নিশ্বাস ছুঁয়ে দগ্ধ হয়েছি
শ্বাসপ্রশ্বাসে পুড়েছে কন্ঠ।
চাহনিতে হেঁটেছি দীর্ঘপথ
ঠোঁটের উষ্ণতায় জব্দ।

হাতের স্পর্শে জ্বালাপোড়া অনুভূতি
শিহরণে শিহরিত কঙ্কাল দেহ।
মুখোমুখি মুখপানে মুখপোড়া আবেগ
নিঃসৃত নিস্তেজ নিস্তব্ধ মুহ"।

কবিতার নামঃ ছোঁয়া

হেমন্তে আজ সর্ব মহলে বেশ পরিচিত। খবরের কাগজে মাঝেমধ্যেই ওর নাম আসে। ওর লেখা গল্প, কবিতা, ধারাবাহিক উপন্যাস পড়ে পড়ে-ই দিন কাটে আমার। বিভিন্ন লাইব্রেরিতেও ওর লেখা জনপ্রিয় উপন্যাস পাওয়া যাচ্ছে। টকশোতেও মাঝে মাঝে সাহিত্য নিয়ে কথা বলে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আয়োজনে আমার দাওয়াত কার্ড আসে। তখন.......।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মুহম্মদ মাসুদ ধন্যবাদ কবিবর, এভাবেই পাশে রাখুন।
নাজমুল হুসাইন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আয়োজনে আমার দাওয়াত কার্ড আসে। তখন.......।ভালো লাগা রইলো নিরন্তর।
মুহম্মদ মাসুদ ধন্যবাদ কবিবর, ভালো লাগলো, ভালো থাকুন সবসময়।
রঙ পেন্সিল মন দিয়ে পড়লাম । ভাল লাগলো। আর কবিতাটা কিন্তু দুর্দান্ত হয়েছে। শুভকামনা
মুহম্মদ মাসুদ ধন্যবাদ কবিবর, অবশ্যই। ভালো থাকুন।
Abdullahil Kafi সুন্দর প্রকাশ। ভোট রইল ভাই। আশা করি আমাকেও ভোট করবেন
মুহম্মদ মাসুদ ধন্যবাদ প্রিয়। অবশ্যই। কেন নয়।
মাইনুল ইসলাম আলিফ খুব সুন্দর আইডিয়া।গল্পের প্লট,উপস্থাপনা দুটোই দারুন লেগেছে।ভোট রইল।আসবেন আমার গল্প আর কবিতার পাতায়।
মুহম্মদ মাসুদ ধন্যবাদ কবিবর, ভালো থাকুন সবসময়।
বিশ্বরঞ্জন দত্তগুপ্ত গল্পটি পড়ে ভাল লাগল । শুভকামনা রইল ।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

বিয়ে নিয়ে অনেকের অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমারও সেরকমই। হয়তো হতে পারে আমাদের বিয়েটা ছিলো একটু অন্যরকমের অন্য ধরনের। তবুও তো বিয়ে। সেই বিয়ের ঘটনাটিই না হয় বর্ণনা করলাম। বিষয়ের সাথে যেমন সামঞ্জস্যতা তেমনি রয়েছ ভাবপূর্ণ ভালোবাসার গপ্পো।

৩০ মে - ২০১৮ গল্প/কবিতা: ৪৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪